১৩ জুন, ২০১৭ সন্ধ্যার ঘটনা। আসাদগেট আড়ং এ দুই বান্ধবী মিলে জামা দেখছি। কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম handbag এর চেইন খোলা। তাকিয়ে দেখলাম মোবাইলটা আছে, wallet টা নাই।
সাথে সাথে কাউন্টার এ বললাম। তাদের বক্তব্য এরকম-
- এখন তো এখানে প্রায় দিনই এরকম হচ্ছে। আপনারা ব্যাগ একটু সাবধানে রাখেন না কেন?
- এখানে যারা shopping করতে আসছে তারা সবাই মোটামুটি টাকাপয়সাওয়ালা। এরা যে চুরি করবে, এ কারণে ব্যাগ আলাদাভাবে সাবধানে রাখতে হবে এটা তো ভাই মাথায় আসেনাই।
-ব্যাগে কি বেশি টাকাপয়সা ছিল?
-টাকাটা তো fact না, ব্যাগে আইডি কার্ড আছে, কাগজপত্র আছে। ওগুলো তো important জিনিস।
-তাহলে একটা কাজ করতে পারেন,টাকা হয়ত পাবেন না কিন্তু অনেক সময় হয় যে টাকা নিয়ে চোর ব্যাগ ফেলে দিয়ে যায়। ওরকম হলে, কেউ খুঁজে পেলে আমরা জানাতে পারব আপনাকে ফোন দিয়ে।
বেশ ভালো কথা। এটাও যথেষ্ট উপকার। ফোন নম্বর রেখে আসলাম।
আসাদগেট থেকে গ্রিনরোড সিগন্যাল পৌঁছনোর আগেই ফোন আসল। একটা wallet পাওয়া গেছে, ভেতরে কোন টাকা পয়সা নাই তবে একটা আইডি কার্ড, কিছু পাসপোর্ট সাইজ ছবি, কাগজপত্র এসব আছে।
জিজ্ঞেস করলাম, আপনি আড়ং থেকে বলছেন?
বলে, "না আমি পপুলার এর সামনে থেকে বলছি। আপনার wallet টা এখানে পাওয়া গেছে। সিটি কলেজ এর এখানে এই জিগাতলার কাছে। আপনি এখনি এসে নিয়ে যান।"
বলতে বাধ্য হলাম, "ভাই টাকাপয়সা যেহেতু নাই,আপনি নিশ্চিন্তে পপুলার এর সামনে একটা দোকানে রেখে যান, আমি কালকে নিয়ে আসব।"
এরপরেও জেদাজিদি করছিল তখনি গিয়ে নিয়ে আসার জন্য, রাজি হলাম না।
এখন প্রশ্ন হলো-
১. wallet যদি পপুলার এর সামনে পাওয়া গিয়ে থাকে, তাহলে আমার মোবাইল নম্বর পেল কোথায়? wallet এর ভেতরে তো মোবাইল নম্বর ছিলোনা আমার; আমার নম্বর আছে শুধুমাত্র আড়ং এর কর্মচারীদের কাছে।
২. শুধু চুরি করাই যদি উদ্দেশ্য হয়, তাহলে তো খালি ওয়ালেটটা আড়ং থেকে ফোন দিয়ে আমাকে নিয়ে যেতে বললেই হতো। রাতের সাড়ে আটটায় দুইটা মেয়েকে জিগাতলায় যেতে বলা কেন?
গেলে অবশ্যই আমার জন্য আরো বিপদ অপেক্ষা করেছিল।
আল্লাহ হয়ত আমাকে অল্পের উপর দিয়ে পার করে দিল। কিন্তু এখন যারা রোজ ঈদের শপিং করছে তাদের প্রত্যেকেরই সাথে বেশ ভালো একটা অংকের টাকা থাকে। এটারই সুযোগ নিচ্ছে এরা। অথবা কারো ব্যাগে মূল্যবান কোন কাগজপত্র বা কিছু থাকলে সেটা নিতে এদের কথা মতো কোন জায়গায় গিয়ে আরো বড় কোন বিপদে পড়তে পারে যে কেউ। আর এখানে এখন সন্দেহের কোন অবকাশ নেই যে এই পুরো ব্যাপারটাতে আড়ং এর একাধিক কর্মচারী একসাথে জড়িত। এরা একটা চক্র। সবাই সাবধান থাকুন।
আড়ং এর মত নামী ব্রান্ডের নামের আড়ালে তাদের কর্মচারীদের এ ধরণের কার্যকলাপ যথেষ্ট লজ্জাজনক।
So, girls be alert!
লেখা- ফারাহ তাসনিম বাঁধন।
(সংগৃহীত)
ভালো থাকুন | School of Awareness
No comments:
Post a Comment