১) আপনি ব্যাংক থেকে ৩লাখ টাকা তুলে লোকাল বাসে উঠলেন। কারণ সিএনজিতে উঠলে ছিনতাইয়ের ভয় থাকে। বাস চলা শুরু করলে কিছুদূর যাওয়ার পর এক ব্যক্তি হঠাৎ হা-হুতাশ শুরু করলো, "আমার ব্যাগ চুরি হয়েছে; ব্যাগে তিন লাখ টাকা ছিল" আশে পাশের সবাই তাকে সান্তনা দিবে। একজন হঠাৎ বলবে, "এই বাসের কেউই হয়তো নিয়েছে, সার্চ করে দেখা হোক"। ৮-১০ জন তাকে সাপোর্ট দিবে। এই ৮-১০ জন বাসের সবাইকে সার্চ করা শুরু করবে। অবশেষে আপনার কাছে ব্যাগ পাওয়া যাবে। ব্যাগের রং মিলবে, বাহ্যিক বর্ণনা মিলবে, টাকার পরিমাণও মিলবে। আপনাকে চোর সাব্যস্ত করে উত্তম-মধ্যম দেয়া হবে, টাকা নিয়ে তারা চলে যাবে। কমপক্ষে ৮-১০ জন এই কাজ করে একসাথে। ব্যাংক থেকেই ফলো করা শুরু করে এরা।
ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সময় সতর্ক থাকা ভালো। সম্ভব হলে একাকী টাকা না তোলা উচিৎ। যেই ব্যাগ ইউজ করছেন সেই ব্যাগের কিছু বৈশিষ্ট্য জেনে রাখা ভালো।
২) খুব সকালে অথবা রাতে আপনি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন কিংবা রিকশায়। রাস্তা ফাঁকা। হঠাৎ একটা মোটরসাইকেল এসে টান দিয়ে ব্যাগ নিয়ে যাবে। আপনি খুব শক্ত করে ব্যাগ ধরে রেখেছেন? তাতে ফলাফল আরো মারাত্মক হবে। এক্সিডেন্ট করবেন, জীবনও চলে যেতে পারে। কয়েক মাস আগেই এক মহিলার ব্যাগ টান দিয়েছিলো মাইক্রোবাস থেকে। ব্যাগ মহিলার হাতে প্যাঁচানো ছিল। প্রায় এক কিলোমিটার তারা মহিলাকে ছ্যাচড়িয়ে নিয়ে গেছে, ততক্ষণে মহিলার মৃত্যু হয়ে গিয়েছে। তবুও তারা ব্যাগটা ছাড়েনি। আপনি হয়তো ভাবছেন আপনার কাছে তো টাকা-পয়সা নেই, আপনার ব্যাগ কেউ টান দিবে না। আপনার কাছে টাকা-পয়সা নেই এটা আপনি জানেন, তারা তো জানে না।
রিকশায় বসলে ব্যাগ দুই পায়ের ফাঁকে রাখা ভালো আর হাঁটার সময় রাস্তার পাশে যেই হাত তার বিপরীত পাশের হাতে ব্যাগ রাখবেন।
৩) আপনি গাড়িতে আছেন। মোটামুটি উপরের কোন পদ্ধতি কাজ করবে না তাই রিলাক্সে গাড়ি চালাচ্ছেন। হঠাৎ পাশ থেকে এক গাড়ি এসে ধাক্কা দিবে। রেগেমেগে আপনি গাড়ি থামিয়ে চার্জ করতে যাবেন। অপর গাড়ি থেকে ৪-৫ জন নেমে এসে উলটা আপনাকে চার্জ করবে, ক্ষতিপূরন চাইবে, টাকাপয়সা নিয়ে যাবে। না দিতে চাইলে মারধোর করবে। এই ঘটনাটি বেশী ঘটবে ফ্লাইওভারের উপর, হাইওয়েতে কিংবা ফাঁকা রাস্তায়। এই ধরনের রাস্তায় গ্যাঞ্জাম দেখলে আপনি চিল্লাচিল্লি করলেও কেউ গাড়ি থামাবে না।
এই ক্ষেত্রে গাড়ি না থামানোই ভালো। আর নয়তো আশেপাশে পুলিসের সাহায্য গ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে।
তিন ক্ষেত্রেই আপনার টাকা তো যাবেই, সাথে মারধোর কিংবা আহত হওয়ার ভয় থাকে।
৪) আপনি ফ্লাইওভার দিয়ে যাচ্ছেন, সিএনজিতে। পুলিস সিএনজি থামালো। আপনার পকেট সার্চ করার সময় ইয়াবা পাওয়া যাবে কিংবা আপনার ব্যাগে জিহাদী বই পাওয়া যাবে। প্রথমেই হালকা মারধোর করে ভয় পাইয়ে দিবে। তারপর বাসায় ফোন দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে নিবে। সাথে টাকাপয়সা বা দামী কিছু না থাকলে থানায় নিয়ে আটকে রেখে বাবা-মাকে ফোন দিয়ে আনাবে। তারপর টাকা-পয়সা নিবে। একমাস পরেই ঈদ। পুলিসদেরও তো ঈদ করতে হবে। তাদেরও তো বসুন্ধরা সিটিতে মার্কেট করতে মন চায়। তাই ১৫ রোজার পর তারা বেশী করে এইসব খ্যাপে নামবে।
পুলিশ ধরলে বাঁচার উপায় নাই। রাজনৈতিক কিংবা প্রশাসনিক পাওয়ার থাকলে ভালো। আর নয়তো চেষ্টা করবেন গোপনে কথা রেকর্ড কিংবা ভিডিও করতে। এছাড়া ফাপরে কাজ হতে পারে। আপনাকে প্রথমেই ভড়কে দিবে, আপনি যদি ফাপর দিয়ে উল্টা ভয় দেখাতে পারেন তাহলে হয়তো বেঁচে যাবেন। তাদের মনেও ভয় থাকে, এমপি, মন্ত্রী, আইজি কিংবা ছাত্রলীগের নেতার ভয়। কিন্তু ফাপর দিলে বুঝে শুনে দিয়েন। যদি বুঝতে পারে ফাপর দিচ্ছেন তাহলে হিতে বিপরীত হবে। কনফিডেন্টলি ফাপর দিতে হবে।
এছাড়াও চলন্ত বাসে পকেটমার সাজিয়ে মারধোর কিংবা ব্যস্ত রাস্তায় ছিনতাইকারী সাজিয়ে মারধোর করারও ঘটনা আছে। বাঁচার জন্য সবসময় নিজের আইডি কার্ড সাথে রাখা ভালো। আর ঈদের আগের এই কয়েকদিন সাবধানে থাকা উচিৎ।
(সংগৃহীত)
ভালো থাকুন | School of Awareness
No comments:
Post a Comment